প্রাচীনকাল থেকেই মদন উপজেলা জনেগাষ্ঠী ক্রীড়ামোদী। এখানে প্রতিবছরই বিভিন্ন টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়। এখানকার জনপ্রিয় খেলার মধ্যে বর্তমানে ক্রিকেট ও ফুটবলের আধিপত্য দেখা গেলেও অন্যান্য খেলাও পিছিয়ে নেই। মদন উপজেলা নিম্নাঞ্চল হওয়ায় খেলার মাঠ খুবই কম। তবে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে উল্লেখ যোগ্য হলো ষাঁড়ের লড়াই। উপজেলা প্রতিটি স্কুলেই খেলার মাঠ রয়েছে।
ষাড়ের লড়াই:
মদন উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ফসল তোলার পর পতিত মাঠে ষাড়ের লড়াইয়ের আয়োজন করে। ষাড়ের লড়াইকে স্থানীয় ভাষায় আড়ং বলে। উল্লেখযোগ্য লড়াইয়ের আয়োজন হয় গোবিন্দশ্রী, কুলিয়াটি, উচিৎপুর, কদমশ্রী, মাঘান, চানঁগাও চকপাড়া মাঠে। যে মাঠে যে দিন আড়ং এর তারিখ নির্ধারণ হয় সে তারিখের দু -একদিন পূর্ব থেকেই সে গ্রামে উৎসবের আমেজ বিরাজ করে।
লোক ধাঁধা:
গ্রামের বিয়ে-শাদীর আসরে লোক ধাঁধা দিয়ে বরপক্ষকে কনে পরে তরুন তরুণীরা ধাঁধায় ফেলতে চেষ্ঠা করে। ঢপযাত্রা মদন উপজেলার গৃহস্থ বিত্তবানদের অন্যতম বিনোদন ছিল। তারা ঢপযাত্রার দল করে ও সাধারণ মানুষ উপভোগ করে তৃপ্ত হতো। এখন অবশ্য ঢপযাত্রার আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। বিভিন্ন নাট্য সংগঠন করে যুবকরা শীত মৌসুমে মঞ্চায়ন করে। এক সময় পুরুষরা নারী চরিত্রের অভিনয় করতো। এখন নেত্রকোণা অথবা ময়মনসিংহ শহর থেকে পেশাদার অভিনেত্রী নিয়ে এসে যাত্রা মঞ্চায়ন করে।
নাট্য সংগঠন:
মদন উপজেলার উল্লেখযোগ্য নাট্য সংগঠন রূপালী নাট্য সংঘ, মহুয়া নাট্য সংঘ, কুলিয়াটি নাট্য সংঘ। বুলবুলে হাসান, জাহিদ হাসান ও মুক্তুল মাষ্টার এ নাট্য সংগঠনগুলোর নাটক পরিচালনা করেন। এরা এক সময় দেশের বিভিন্ন যাত্রাদলে পেশাদার অভিনেতা ছিল।
লোক ক্রীড়া :
মদন উপজেলার অন্যতম খেলা বিশেষ করে ছেলেদের বর্ষাকালে হাডুডু, শীতকালে দারিয়াবান্দা, মেয়েরা বৌছি, মোলাবাড়ী, ষোলকড়ি, মক্কা, কুতকুত খেলে।
গীত পরিবেশন:
গ্রামের বিয়েতে এখনো বিয়েরগীত প্রচলিত রয়েছে। গ্রামের বিয়েতে পাড়া প্রতিবেশী মহিলারা গীত পরিবেশন করে। বিয়ের গীতের কথাগুলো অতীত বেদনা বিধুরতাই বেশী থাকে।
নৌকা বাইচ:
বর্ষায় নৌকা বাইচ মদন উপজেলার অন্যতম সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য। মদন উপজেলার পূর্বাঞ্চলে গ্রামগুলোতে বর্ষায় নৌকা বাইচের দল গড়ে উঠে, দিন তারিখ নির্ধারণ করে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা হয়। প্রতিবছর শ্রাবণ মাসে ফতেপুর, কুলিয়াটি ও কদমশ্রী গ্রামে নৌকা বাইচের প্রতিযোগিতা হয়। পুরস্কার হিসেবে বিজয়ীদল গরু পায় পরাজিত দল পায় খাসী। সে গরু, খাসী জবাই করে গ্রামবাসী ফূর্তি করে খায়।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস